লাশটা গিয়ে ঠিক সেখানটাতেই পড়ল
সময়টা তখন কৃষ্ণপক্ষ।চারিদিক ঘুটঘুটে অন্ধকার।গা ছমছম পরিবেশ।আকবর সাহেব লবণ ব্যবসায়ী।সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি একাই লবণের ঘের পাহারা দিবেন।কাউকে পাশে রাখলেন না সকলের আপত্তি সত্ত্বেও।
সকলকে বিদায় করে তিনি রান্নার কাজে লেগে গেলেন।একাহাতে সবকিছু রেডি করতে বেশ সময় লেগে গেল।চালটা বসিয়ে দিলেন চুলায় আর কত কিছু ভেবে চলেছেন।এর আগে কতবার একা একা রাত্রিযাপন করেছেন কিন্তু এমনটা তো কখনো মনে হয়নি।কতসব ভাবনা মনের দোরগোড়ায় এসে উঁকি দিচ্ছে।গাটা কেমন ভারি ভারি লাগছে।সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতে ভাতের মাড়টা ফেলার জন্য বাইরে আসলেন।অন্ধকারে থাকতে থাকতে অন্ধকারও একসময় গা সওয়া হয়ে যায়।অন্ধকারেও সবকিছু দেখা যায়,অনুমান করা যায়।হঠাৎ তার চোখে পড়ল সমানের পুকুরটা।ওমা ওখানে সোনার মত নৌকা কোথা থেকে আসল।না না,এতো সত্যিই সোনার নৌকা।অন্ধকারেও নৌকা থেকে আলো বিচ্ছুরিত হচ্ছে।নৌকাটা পকুরের মাঝ বরাবর গিয়েই তলিয়ে গেল।এমন দৃশ্য দেখে গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠল।নিষ্পলক দৃষ্টিতে চেয়ে রইলেন।কিন্তু পাশের চিৎকারের শব্দে উনি জ্ঞান ফিরে পেলেন।একজন পুরুষ একটা সুন্দরী মহিলাকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে আসছেন।অন্ধকার মেয়েটির সৌন্দর্য আড়াল করতে পারেনি।কি অপরূপ সৌন্দর্যের অধিকারী।
আর উনিই বা কে এভাবে একজন অসহায় মহিলাকে টেনে আনার চেষ্টা করছে।মহিলাটি প্রাণপণে নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন।কিন্তু হায় আকবর সাহেব যা দেখলেন তা কল্পনাতীত।পুরুষটি হঠাতই মহিলার বুকের উপর ঝাঁপিয়ে পড়লেন।কয়েক মিনিট পরই মহিলাটির নড়াচড়া বন্ধ হয়ে গেল।
আকবর সাহেব এতোক্ষণ গাছের আড়ালে দাঁড়িয়ে ঠকঠক করে কাঁপছেন।জ্ঞান হারাবার উপক্রম।
লোকটি মহিলাকে কোলেকরে পুকুরপাড়ে এনে ছুঁড়ে ফেলে দিল। যেখানে নৌকাটা ডুবে গিয়েছিল লাশটা গিয়ে ঠিক সেখানটাতেই পড়ল।পড়ার শব্দ মিলিয়ে যাওয়ার আগেই আকবর সাহেব দিলেন ভৌদৌঁড়।দৌঁড়াতে দৌঁড়াতে যেন কিসের সাথে ধাক্কা খেয়ে থেমে গেলেন।কলিম চাচা বলছেন - কি হয়েছে বাপু এমন দৌঁড়াচ্ছ কেন।জনমানব শূণ্য এলাকায় কাউকে দেখে তিনি যেন প্রাণ ফিরে পেলেন।সবঘটনা খুলে বললেন।
কলিম চাচা বললেন এমন ঘটনা নাকি তিনিও দেখেছেন।শুধু তিনিই নয় তার বাব এমনকি তার দাদাও একই ঘটনা দেখেছেন।এটা নাকি দেড়শ বছরের পুরানো ঘটনা।একই ঘটনার বারবার পুনরাবৃত্তি ঘটে।
Post a Comment