একটি বিবেকের মৃত্যু _ মুহম্মদ রমজান আলী

0



একটি বিবেকের মৃত্যু

মুহম্মদ রমজান আলী

সেদিন মসজিদে হিসেব নিকেশে একটু হলো দেরি

দেখি রহিম উদ্দিন চাচা, গেটে করছেন পায়চারি।

তোমার জন্যিই বাপু দাঁড়িয়ে আছি- একটা কথা বলি

হ্যাঁ হ্যাঁ বলুন, কথা বলি আর পথ চলি।

শুনছেন তো বাপু, মেয়েটি আমার দিলেম বিয়ে

অনেক খড়কুটো পুড়ে, মোটা অংকের টাকা দিয়ে।

কৌতুহলভরে জিগালাম, জামাই কি করেন চাচা?

মুচকি হেসে কহেন, আমি কি এতোই কাঁচা!

সরকারি একখান চাকরি করেন, কথা একদম হাঁচা

বেতন বাপু যাই হোক, উপরি টা আছে খাসা।

পথে কখন যোগ হয়েছেন পাড়ার হাসু মিএ

খুব ভালো করেছ মশাই,এমন বিয়ে দিয়ে।

আমার পোলাও চাকরি করেন- এয়ারপোর্টে বড় প্রহরি

দুই বছরেই দালান বাড়ি, টাকা কাড়ি কাড়ি।

তা তোমার ছেলে করেন কী বলো একটু খুলে?

শুনলাম,চাকরি না পেয়ে আছে নাকি ঝুলে?

আনমনে চলি পথ সাথে, মুখে কথা নেই

শুনে ওদের বাহারি আলাপ, হারিয়ে ফেলি খেই।

চিন্তার ছেদ ঘটে, নইমুদ্দিন চাচার মধুর ডাকে

পোলাডার আমার চাকরি হলো কোটার এক ফাঁকে।

এক অফিসের বড়বাবু হইছে আমার ছেলে

এক বছরেই কিনেছি বিঘাখানি, কিনব আরও পেলে।

মাথামুণ্ডু খেয়ে জিগালাম, বেতন তাহার কত?

হা হা হা আছেন কী কেউ আমার ছেলের মত?

দুত হাতে উড়ায় টাকা, দান খয়রাত শত।

তা শুনেছি বাপু, বেতন তোলে কদাচিৎ

আও ফাও অনেক বেশি, নেই কোন বাতচিৎ।

শুনে ওদের কথা, চিনচিন করে হৃদ মাঝে

শয়নে স্বপনে মনের মাঝে কথাগুলো শুধুই বাজে।

আমরা কি মানুষ! না কী শুধুই জীব মাত্র

বিবেক বলে কি কিছু নেই ভাবি দিবারাত্র।

না কী বিবেককে করেছি বিক্রি, দুনিয়ার মোহে

শুধুই শয়তানের বাস এইখানে, প্রানহীন দেহে?

 


Post a Comment

0Comments
Post a Comment (0)