নিম্ম মধ্যবিত্ত পরিবার

0



নিম্ম মধ্যবিত্ত পরিবার

কিছু হাসি কিছু ব্যাথা ছোট ছোট দুঃখ কথা।এই নিয়ে একটি নিম্ম মধ্যবিত্ত পরিবারের জীবন গাঁথা।প্রতি জীবন এর গল্প ছবির মতো কিন্তু ছবি জীবন এর মতো নয়।তাই তো প্রতিটি নিম্ম মধ্যবিত্ত পরিবারের জীবন গল্পে হারমানা না মানা নিয়ে জীবন সংগ্রাম এর অসমাপ্ত গল্প কাহিনী হাজার বছর ধরে চলমান থেকেই যায়।আমি নিম্ম মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম গ্রহন করেছি এটা আমার গর্ব।এখানে প্রত্যেক সদস্যরা একে অপরের প্রান কেন্দ্র কেউ কার থেকে আলাদা নয়। দিন শেষে পরিবারের সকল সদস্যরা এক চালের নিচে বসে তাদের সুখ দুঃখ হাসি কান্নার ভাগিদারী হয়।নিম্ম মধ্যবিত্ত পরিবারের প্রধান অর্থাৎ জীবন সংগ্রাম এর নায়ক পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ভালবাসার ছায়া বাবাই হয়ে থাকেন। 

জন্ম থেকেই যাকে আমরা দেখতে পাই জীবন সংগ্রামের একজন শ্রেষ্ট নায়ক হিসাবে।আর মায়েরা পরম আদর যন্তে সংসার পরিচালনা করেন।পরিবারের সকল এর ভরন পোষন এর দায়িত্ব এই বাবাদের ই।তাই তো আমি দেখেছি নিন্ম মধ্যবিত্ত পরিবারের বাবা হয়ে থাকেন সৎ কঠোর পরিশ্রমি দায়িত্ববান ন্যায় নীতি আর আর্দশে ভরা একজন মানুষ,যে নিজে কথা কখনো চিন্তা করে না ফুটো জামা আর ছেড়া জুতা পরে সন্তান এর ভবিষ্যৎ এর কথা ভাবেন।নিজে ভালো খাবার মুখে না দিয়ে সবার মুখে খাবার তুলে দেওয়া,পরিবারের সবার সুখ তার একমাত্র কাম্য বা ধ্যান ধারনা।

একটু ভালো ভাবে জীবন যাপনের চেষ্টা অবিরাম।ভাগ্য পরিবর্তন এর জন্য যে কোন পেশাকে ছোট মনে করেনা।শত অভাবের মাঝে থেকেও কার কাছে হাত না পাতার গর্বটা সব সময় অটল থাকে।নিন্ম মধ্যবিত্ত পরিবারের বাবারা সরল সৎ চিন্তার অধিকারী থাকেন তাই তাদের প্রতিপদে পদে ঠকতে হয়।নিন্ম মধ্যবিত্ত পরিবারের একমাত্র সম্পদ হলো তাদের আত্মসম্মান।এই পরিবার গুলোর সদস্যরা এক সুখ দুঃখে বাধা তাই কাউকে তার দায়িত্ব বলে কয়ে বুঝিয়ে দেওয়া হয় না।সন্তানেরা মন থেকে চায় তাদের পরিবারের জন্য কিছু করতে,অসহায় মেয়েরা বাবা কাজে সাহায্য না করতে পারলে তারা শিখে যায় কিভাবে নিজের লেখাপড়ার পাশাপাশি প্রাইভেট পড়িয়ে পড়ার খরচ জোগানো যায়,কিভাবে মিনিট এর পথ ১০ টাকা রিক্সা ভাড়া না দিয়ে হেটে যেতে হয়,বাবার সাথে বাজার এর ব্যাগ বহন করতে করতে ছোট বেলাই তারা শিখে যায় কিভাবে বাজার গিয়ে দাম কষিয়ে বাজার করতে হয়। 

বাবার পেশা কখনো তাদের জন্য লজ্জাকর হয়না,আর বাবাও সন্তানকে উচ্চ শিক্ষিত করতে গিয়ে নিজের স্বর্বস বিক্রি করতে দ্বিধা বোধ করে না।সামাজিক সকল বাধা সকলের কটুক্তিকে উপেক্ষা করে তিনি তার লক্ষ্যে পৌছানোর চেষ্টা চালিয়ে যান।সন্তান লেখাপড়া শেষে একটা ভালো চাকুরি করবে এটা তার প্রত্যাশা।এই টুকু শান্তনা এই টুকুই পাওয়া সবাই যেন বলে অমুক ডাক্তার, অফিসার,শিক্ষক এর বাবা।নিন্ম মধ্যবিত্ত পরিবার গুলোর বাবা মায়েরা খুব অসহায় হয়ে থাকেন।

আর যে পরিবার গুলোতে শুধু মেয়েরা রয়েছে সেখানকার বাবা মায়েরা তো আর বেশি অসহায় হয়ে থাকে।বাবা মার পরিবারের পূর্ন সাপোট থাকলেও অনেক সময় মেয়েদের লেখাপড়ায় অনেক বাধা আসে শুনতে হয় মেয়েদের এত লেখাপড়া করিয়ে কি লাভ,বিয়ে দিয়ে দিলেই হয়।ভালো স্কুল কলেজের হোস্টলে রেখে পড়ানো হয় না সমাজের নানা কথার মুখে পরার ভয়ে।তবুও বাবারা তাদের স্বপ্নকে বাঁচিয়ে রাখে ,আর এভাবেই স্বপ্নের বীজ বুনতে থাকেন বৃদ্ধ বয়সে একটু স্বপ্নের বাড়িতে বসবাস করবেন সন্তানদের ছেলে মেয়েদের নিয়ে।ঠিক যখন ভাগ্যের চাকা ঘুড়তে থাকেন লেখাপড়া শেষে একটা ভালো বা সরকারি চাকুরি হয়ে যায় ,সন্তানেরা ভাবেন বাবাকে এবার কর্মজীবন থেকে অবসর দিবেন,ঠিক তখন কাঙ্খিত সুখের কাছাকাছি এসে সুখের লক্ষ্য মাত্রায় পৌছাবে অর্থাৎ সুখ শান্তি ভোগ করবে তখন বাবাদের কার মায়দের চলে যেতে হয় সন্তানদের ভালবাসার মায়া ত্যাগ করে পরপারে।

ঠিক যেন সারা জীবন এর কঠোর পরিশ্রম ,দুঃচিন্তা,দুঃখ কষ্টের পরে কাঙ্খিত সুখ তাদের আর ভাগ্যে সহ্য হয় না।তাই তো সুখের ছোয়া পেয়েই আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে সন্তানদেরকে আজীবন আফসোস এর মধ্য রেখে চলে যান।এটাই নিন্ম মধ্যবিত্ত পরিবারের চিরাচরিত নিয়ম হয়ে যেন আসছে।আবার কখনো কখনো দেখা যায় তার চাকুরি জীবন থেকে অবসর হয়ে পেনশন এর টাকায় একটা স্বপ্নের একতলা বাড়ি তৈরী করেন কিন্তু সেই বাড়িতে সর্বচ্চো দু এক বছর থাকেন তাও আবার শারীরিক নানা অসুস্থতা নিয়ে এরপর সেখান থেকেই অসহায় ভাবে মৃত্যূ হয়ে থাকে।হাজার বছর ধরে এই নিয়ম যেন আর শেষ হচ্ছে না।তাই তো নিন্ম মধ্যবিত্ত পরিবারের বাবাদের জীবন সংগ্রাম এর গল্প কাহিনী শেষ হয়ে শেষ হয় না।

ছোট প্রান ছোট আশা ছোট ছোট দুঃখ ব্যাথা এই নিয়েই একটা নিন্ম মধ্যবিত্ত পরিবারের গল্প কথা।।

বিঃদ্রঃ নিন্ম মধ্যবিত্ত পরিবার হলো আমাদের সমাজে একটি বাস্তব জীবনের শিক্ষা।

Hameda Akter Popi

হামিদা আকতার পপি

Post a Comment

0Comments
Post a Comment (0)